শিশু রোহানকে বাঁচাতে বাবা-মায়ের আকুতি

ফজলুর রহমান,নিজস্ব সংবাদদাতাঃ

 

নাটোরের বাগাতিপাড়ার শিশু রোহান মাহমুদ, বয়স ৭ বছর। এত অল্প বয়সেই সে এ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে শিশু রোহান বাঁচতে চায়, ফিরে যেতে চায় ক্লাস রুমে,ফিরে যেতে চায় খেলার সাথীর সাথে খেলার মাঠে,ফিরে যেতে চায় আজান হলেই নামাজের জন্য মসজিদে।

শিশু রোহান মাহমুদ বাগাতিপাড়া পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া মহল্লার ভ্যান চালক রবিউল ইসলাম ও গৃহিণী রুনি খাতুন দম্পতির ২ ছেলে,রোহান বাড়ির পাশেই অবস্থিত বাগাতিপাড়া পৌর প্রি ক্যাডেট স্কুলের ১ম শ্রেণির ছাত্র,হঠাৎ করে সে এই বিরল রোগ এ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

রোহানের মা রুনি খাতুন বলেন, কুরবানির ঈদ পর পর ছেলের হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে ও শরীরে ছোট ছোট কালচে কালচে দাগ দেখা যায়, তখন আমরা ছেলেকে নিয়ে নাটোর হাসপাতালে ডাক্তার দেখায়, সেখানে সুস্থ না হলে তাকে নিয়ে রাজশাহী হাসপাতালে যায়,এমতাবস্থায় ছেলের হেপাটাইটিস ধরা পড়লে সেখানে ৬ দিন ভর্তি রেখে সুস্থ হলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন,বেশ কিছু দিন পর পূনরায় ছেলের হঠাৎ জ্বর আসলে আমরা রাজশাহীতে নিয়ে যায় ছেলেকে ভর্তির সময় রক্ত সহকারে বমি করে ও পায়খানার সময়ও রক্ত বের হলে তারা চিকিৎসার জন্য ভর্তি রেখে কয়েকদিন পর ঢাকায় প্রেরণ করেন,তার চিকিৎসা খরচ ব্যায়বহুল হওয়ায় আমরা আপনাদের নিকট সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি।

রোহানের পিতা রবিউল ইসলাম বলেন,আমার অসুস্থ ছেলের সুস্থতার জন্য আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নবজাতক, শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মু. মুসাররাত সুলতানা (সুরভী), হেপাটোলজি বিভাগ ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মুকিত, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ইকবাল হোসেন সহ অনেককে দেখিয়েছি,এমন কি সর্বশেষ ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনিস্টিউটে নিয়ে গিয়ে ১২ দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা করিয়েছি, পরিক্ষা নিরিক্ষার শেষে ডাক্তারা বলেছেন রোহান
এ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়া রোগে আক্রান্ত, এই
রোগীকে সুস্থ করতে হলে অপারেশন করতে হবে, তাতে প্রায় ৩০-৪০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন অথবা ইনজেকশন করতে হবে যাহার প্রতিটির মূল্য প্রায় ২-৩ লক্ষ টাকা, ঢাকা থেকে রিলিজ দেওয়ার সময় বলেছে শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার জন্য, আমি একদম নেহাত ভ্যান চালক, রাস্তায় তেমন রোজকার হয় না,যা হয় তা দিয়ে সংসার চালানো বড় দুষ্কর, আমার সন্তানের সুস্থতার জন্য আপনাদের নিকট হাত পেতে কিছু অর্থনৈতিক সহযোগিতা চাই,পাশাপাশি দোয়াও চাই।

রুহানের চাচা ভ্যান চালক মুনতাজ বলেন, গত ১০ তারিখে হঠাৎ ভাতিজার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে জরুরি ভাবে রাজশাহী মেডিক্যাল এ নিয়ে যায় ২ ব্যাগ AB+ রক্তের প্রয়োজন হয়,একটি প্রসেসিং করে সাদা ও একটি লাল রক্তে শরিরের প্রবেশ করাতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা লাগলো, কিছুদিন পরপর রক্ত দিতে হবে সেই খরচটাও আমাদের কাছে নেই, তাই দেশবাসীর নিকট সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি।

রোহানের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান,এই রোহান আমার প্রতিষ্ঠানের ১ম শ্রেণির ছাত্র, হঠাৎ ই তার অসুস্থতায় আমরা মর্মাহত, আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়মিত খোজ খবর রাখছি ও যতটুকু পারছি ততটুকু সহযোগিতা করছি, আমরা সম্মিলিত ভাবে তার পাশে দাড়ালে হয়তো সে সুস্থ হলে শিক্ষিত হয়ে জাতির জন্য কোন উপকারে আসতে পারে,তাই দেশবাসীর নিকট আমার আবেদন এই কোমলমতি শিশু রোহানের পাশে চিকিৎসা সহযোগিতার জন্য দাঁড়ানো।

রোহানের প্রতিবেশী ও বাগাতিপাড়া পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া ওয়ার্ডের কমিশনার (সাবেক) কামরুজ্জামান বাবু বলেন,আমরা যতটুকু পেরেছি তা করেছি যদি সম্ভব হয় আরো করবো,কিন্তু এই ব্যায়বহুল চিকিৎসা ও তার পরিবারের পক্ষে একা করা সম্ভব না,তাই এলাকা ও দেশের বৃত্তবান ব্যাক্তিদের রোহানের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি পাশাপাশি, সরকার যদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে এই অভাবি পরিবারটি ছেলেটিকে বাঁচাতে পারতো।

যোগাযোগ ও সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা-
রুহানের পিতা রবিউল ইসলাম
বিকাশঃ ০১৭৯১-৬৪০২৯৮

এ রকম আরো সংবাদ

আমাদের সাথে থাকুন

0FansLike
0SubscribersSubscribe

সর্বশেষ সংবাদ