
নিজস্ব সংবাদদাতা
ফেনী সদর মডেল থানার দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ছয় মাসের মধ্যে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান ঘুষ-দালালমুক্ত সেবা নিশ্চিতকরণ ও অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। সাল ২০২৫ এর ১৯ ফেব্রুয়ারি যোগদানের পর থেকে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি বিধ্বস্ত ও আস্থাহীনতার সংকটে থাকা থানাটিকে একটি জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে রূপ দিয়েছেন, যেখানে সাধারণ মানুষ এখন হয়রানি ছাড়াই আইনি সেবা পাচ্ছেন।
গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ফেনী মডেল থানার দায়িত্বভারকে নতুন করে সাজিয়েছেন ওসি মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। সেই বিভৎস পরিস্থিতি সামলে তিনি দগ্ধ ও ভাঙাচোরা ভবনের মধ্যেই থানার দৈনিক কার্যক্রম দ্রুত সচল করেন। তার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে অল্প সময়ের মধ্যেই থানাটি পুনর্গঠিত হয়ে আবারও জনসেবার কেন্দ্রে পরিণত হয়।
সাল ২০২৫ এর ১৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ওসি শামসুজ্জামান উপজেলা মাসিক সভায় ফেনী মডেল থানাকে দালাল ও ঘুষমুক্ত করার প্রকাশ্য ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার বাস্তবায়ন হিসেবে থানায় একটি স্বতন্ত্র হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়। সেবাপ্রার্থীদের মতে, এই ডেস্ক চালু হওয়ার ফলে এখন কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই সাধারণ ডায়েরি (জিডি), মামলা দায়ের কিংবা পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মতো জরুরি সেবাগুলো পাওয়া যাচ্ছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত ছয় মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার সাতটি হত্যা মামলাসহ মোট ২২টি মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচ শতাধিক আসামি এবং বিভিন্ন মামলায় চার শতাধিক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া, আশিজন মাদক ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। নিয়মিত মাদকবিরোধী ও দুর্বৃত্ত দমনের অভিযানে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে বলে জানা গেছে।
এসব পরিবর্তন ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, “মানুষের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় বিট পুলিশিং কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলার সার্বিক চিত্র স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হচ্ছে।”
বিট পুলিশিং কার্যক্রমকে জোরদার করার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে বহু দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসা করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, মাদক উদ্ধার, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি এবং ভূমি দখল প্রতিরোধের মতো বিষয়গুলোতেও পুলিশের সক্রিয় তৎপরতা স্থানীয়দের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।